ভারতের ১৪তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত।*

Date:

Share post:

ভারতের নতুন রাষ্ট্রপতি হলেন রামনাথ কোবিন্দ। বিজেপির এই প্রার্থী মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫৮৫ ভোট পেয়েছেন, যা মোট ভোটের ৬৫ শতাংশ। পার্লামেন্ট হাউস ও ১১টি রাজ্যের ভোট গণনা শেষে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান বলে এনডিটিভির খবরে বলা হয়।
রামনাথ কোবিন্দ ভারতের ১৪ তম রাষ্ট্রপতি হলেন। আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা আগেই এরই মধ্যে উত্তর প্রদেশের কানপুরের কাছে পারাউখে কোবিন্দের বাড়িতে শুরু হয়ে গেছে আনন্দ উৎসব। গত সোমবার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নতুন রাষ্ট্রপতি শপথ নেবেন ২৫ জুলাই।
রিটার্নিং কর্মকর্তা অনুপ মিশরা জানান, কোবিন্দের কাছে হেরে যাওয়া কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ প্রার্থী মীরা কুমার পেয়েছেন ২ লাখ ৪ হাজার ৫৯৪ ভোট।
সাধারণ নির্বাচনের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফাত রয়েছে। সাধারণ নির্বাচনে একটি ভোটের মূল্য এক। কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদাতাদের ভোটের মূল্য এক জটিল পদ্ধতিতে নির্ধারিত হয়। লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্য যাঁরা, তাঁদের একেকজনের ভোটের মূল্য ৭০৮, রাজ্য বিধানসভার সদস্যদের ভোটের মূল্য নির্ধারিত হয় সেই রাজ্যের বিধানসভার মোট আসন ও জনসংখ্যার নিরিখে। সবচেয়ে বেশি ভোট মূল্য উত্তর প্রদেশের বিধায়কদের, ২০৮। সবচেয়ে কম সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশের বিধায়কদের, ৮। এবারের ভোটে সাংসদেরা ভোট দেন সবুজ ব্যালটে। বিধায়কেরা গোলাপি ব্যালটে। রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্যরা এই ভোটে অংশ নিতে পারেন না। এবারের ভোটে অংশ নেন লোকসভার ৫৪৩ ও রাজ্যসভার ২৩৩ জন সদস্য এবং দেশের মোট ২৯টি রাজ্য এবং দিল্লি ও পদুচেরি দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ৪ হাজার ১২০ জন বিধায়ক।
সব ভোটদাতার ভোট ধরলে এবারের নির্বাচনে মোট ভোট মূল্য ১০ লাখ ৯৮ হাজার ৯০৩। এর মধ্যে সাংসদদের ভোট মূল্য ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৪০৮, বিধায়কদের ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৪৯৫।
দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ রামনাথ একজন কৃষকের সন্তান। ১৯৪৫ সালে উত্তর প্রদেশের কানপুর দেহাতে তাঁর জন্ম ।
২০১৫ সালের ৮ আগস্ট বিহারের রাজ্যপাল নিযুক্ত হন রামনাথ। কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বাণিজ্য ও আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৪ সালের এপ্রিলে এই দলিত নেতা উত্তর প্রদেশ থেকে রাজ্যসভার সদস্য হন। ২০০৬ সালের আগ পর্যন্ত দুই মেয়াদে ১২ বছর তিনি ওই দায়িত্ব পালন করেন।
রামনাথ পেশায় আইনজীবী। ১৯৭৭ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তিনি দিল্লি হাইকোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী ছিলেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩ সালের আগ পর্যন্ত তিনি দিল্লি হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে ১৬ বছর ওকলাতি করেন।
রামনাথ ১৯৭১ সালে দিল্লির বার কাউন্সিলে নথিভুক্ত হন। তিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রামনাথ দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করা বিজেপির ইউনিট ‘বিজেপি দলিত মোর্চা’র সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত তিনি ওই পদের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি অল ইন্ডিয়া সমাজের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি তিনি দলের জাতীয় মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইয়ের শীর্ষ সহযোগী হিসেবেও কাজ করেছেন রামনাথ।
রামনাথ লক্ষ্ণৌয়ের আমবেদকার বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতার অল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের বোর্ড সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং ২০০২ সালের অক্টোবরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেন। রামনাথের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...

চিত্র নায়িকা নিপুণ চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তিনি। জানা গেছে,...