চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় মাদরাসা ছাত্রকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকলিয়া থানার ওসি রুহুল আমিন সবুজ বলেন, গ্রেফতার যুবক ও তার জমজ ভাই মিলে ওই মাদরাসা ছাত্রকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে জিম্মি করে। এরপর তার বাবার কাছে যে মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে,পুলিশের তদন্তে দেখা গেছে, সেই মোবাইলটি সিমসহ তারা চুরি করেছিল।
শনিবার (১৪ মার্চ) গভীর রাতে নগরীর ক্ষেতচর বাস্তুহারা কলোনি থেকে যুবককে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমীন।
গ্রেফতার যুবক জিসান উদ্দিন রোকন (২১) বাকলিয়া এলাকার বাসিন্দা। তার যমজ ভাই জিয়াম উদ্দিন আরমানকে কয়েকদিন আগে একটি চুরির মামলায় বাকলিয়া থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। আরমান বর্তমানে কারাগারে আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অপহৃত ১৩ বছর বয়সী ইকবাল হোসেন সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি মাদামবিবির হাট এলাকার ‘ইমাম হোসেন হেফজ মাদরাসার’ ছাত্র। তার বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায়।
ওসি রুহুল আমীন গনমাধ্যমক জানান, গত ৬ মার্চ সন্ধ্যায় চকরিয়ায় যাওয়ার জন্য ইকবাল শাহ আমানত সেতু এলাকায় আসে। মাইক্রোস্ট্যান্ডে গাড়ির জন্য অপেক্ষমাণ ইকবালকে রোকন ও আরমান ডেকে একদিকে নিয়ে যান। কথাবার্তায় ঘনিষ্ঠতা গড়ে তাকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। সে রাজি হয়। পরে দুই ভাই মিলে ইকবালকে নিয়ে আটকে রাখে। তার বাবার কাছে ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ‘নগদ‘ অ্যাপসে সাড়ে ৯ হাজার টাকা পরিশোধের পরও ছেড়ে না দেওয়ায় বাকলিয়া থানায় অভিযোগ করেন ইকবালের বাবা।
‘অভিযোগ পেয়ে আমরা মুক্তিপণ যে মোবাইল নম্বর থেকে চাওয়া হয়েছিল, সেই নম্বরের সূ্ত্রে একজনকে ধরে আনি। তিনি জানান, তার বাসা থেকে মোবাইলটি কয়েকমাস আগে চুরি হয়েছে। কিন্তু তার নামে নিবন্ধিত না হওয়ায় তিনি থানায় কোনো জিডি করেননি। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ওই মোবাইল ব্যবহারকারী হিসেবে রোকনকে শনাক্ত করে তাকে বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে অবশ্য শনিবার সন্ধ্যায় ইকবালকে কর্ণফুলী থানার মইজ্জ্যার টেক এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়।’
ওসি রুহুল আমীন আরও বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে রোকন জানিয়েছে, তারা দুই ভাই মিলে অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। আরমানকে আমরা ভিন্ন একটি চুরির মামলায় দুইদিন আগে গ্রেফতার করি। তাকেও এই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।’
তারা আগেও একই ধরনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ওসি রুহুল আমিন সবুজ।