ডেস্ক নিউজ: দেশে প্রথমবার তৃতীয় লিঙ্গের তাসনুভা আনান সংবাদ পাঠ করবেন। আগামী আগামী ৮ মার্চ থেকে নিয়মিত বৈশাখী টেলিভিশনে দেখা যাবে তাসনুভাকে।
বৈশাখী টিভির উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক টিপু আলম মিলন গগণমাধ্যমে বলেন, আমরা জানি, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ছিল দেশের মানুষের মুক্তি, সবার জন্য বাসযোগ্য, বৈষম্যহীন একটি সমাজ গড়ে তোলা। স্বাধীনতার ৫০ বছরে গর্ব করার মতো অনেক অর্জন থাকলেও বৈষম্যহীন ও সবার জন্য নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এই ব্যর্থতার কারণে সবচে বড় অবহেলিত জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ট্রান্সজেন্ডাররা অন্যতম, যাদেরকে চিরাচরিতভাবে হিজড়া বললে আমাদের সমাজে সকলেই বোঝেন।
টিপু আলম মিলন আরো বলেন, বৈশাখী টেলিভিশন স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর এই বছর, স্বাধীনতার মাস মার্চে নারী দিবস উদযাপনের প্রাক্কালে আমাদের চ্যানেলের সংবাদে এবং নাটকে দুইজন ট্রান্সজেন্ডার নারীকে যুক্ত করেছি। দেশের মানুষ এই প্রথম কোনও পেশাদার সংবাদ বুলেটিনে খবর পাঠ করতে দেখবেন একজন ট্রান্সজেন্ডার নারীকে, যা স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশে আগে কখনো ঘটেনি। এই ট্রান্সজেন্ডার নারীর নাম তাসনুভা আনান শিশির। আসছে ৮ই মার্চ’২১ সোমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে শিশির বৈশাখী টেলিভিশনে তাঁর প্রথম সংবাদ বুলেটিন উপস্থাপন করবেন। এরমধ্য দিয়ে দেশে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপনে বৈশাখী টেলিভিশনের ঐতিহাসিক উদ্যোগের সহযাত্রী হবেন তিনি।
তিনি বলেন, একইভাবে আমরা আমাদের বিনোদন বিভাগের নিয়মিত নাটকের মূল চরিত্রগুলোর একটিতে যুক্ত করেছি আরেকজন ট্রান্সজেন্ডার নারীকে। যার নাম নুসরাত মৌ। যাকে পর্দায় প্রথম দেখা যাবে একইদিন আন্তর্জাতিক নারী দিবসে, ধারাবাহিক নাটক “চাপাবাজ”-এর একটি পর্বে। যা প্রচারিত হবে ৮ই মার্চ রাত ৯টা ২০ মিনিটে।
বৈশাখী টেলিভিশনের দুলাল খান বলেন, আমরা বৈশাখী টেলিভিশন দেশ, সমাজ ও সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের প্রতি বিশেষ দায়িত্ববোধ থেকে অন্যদের উজ্জীবিত করতে এমন কিছু উদ্যোগ নিয়ে থাকি। যেমন আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আমাদের বৈশাখী টেলিভিশনের বার্তা বিভাগ পরিচালনার কর্তৃত্ব ছেড়ে দেয়া হয় সকল নারী সাংবাদিক সহকর্মীদের হাতে। এবার নারী দিবসের প্রাক্কালে সমাজের অবহেলিত ট্রান্সজেন্ডারদের ভেতর থেকে সম্ভাবনাময়, প্রতিভাবান ব্যক্তিদের আমাদের সংবাদ ও নাটকের সাথে যুক্ত করার এই উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা সমাজে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে এবং অন্য সকলকে এগিয়ে আসতে উৎসাহ যোগাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
তাসনুভা আনান বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের জেন্ডার ডিসক্রিমিনেশন বা চিরাচরিত প্রথা ভাঙতে পারছি এটা আমার জন্য একটা বড় প্রাপ্তি। আমি বিশ্বাস করি, চাইলে যে কেউ নিজের যোগ্যতাবলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারে। বৈশাখী টেলিভিশনের এই উদ্যোগ দেশের অন্যান্য সেক্টরে দারুণভাবে ভাবিত করবে, বৈশাখী টেলিভিশন দেশের মানুষকে চিন্তার জায়গা করে। সবাই ট্রান্সজেন্ডারদের নিয়ে ভাববে। আর আমার অনুভূতির কথা যদি বলেন, এটা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। বৈশাখী টেলিভিশনের প্রতি আমি খুব গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।’