নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) তল্পিবাহক উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার না হলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ঘোষিত রোডম্যাপ বা সংলাপ অর্থহীন হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবি শীর্ষক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসবকথা বলেন।
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ইসি কখনোই নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় একটি সরকার থাকবে, যে সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। যেটাকে আমরা সহায়ক সরকার বলি। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, এই নির্বাচন কমিশন যতই রোডম্যাপ দিক না কেনো? এটা অর্থহীন। এ রোডম্যাপ অর্থহীন হবে।
ইসির সাথে সংলাপের বিষয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরে মওদুদ আহমদ বলেন, আমরা এ নির্বাচন কমিশনকে পছন্দ করি নাই। আমরা মনে করি এ কমিশন একপেশে। দলীয়ভাবে তাদেরকে নিয়োগদান করা হয়েছে, এ কমিশনের প্রতি আমাদের আস্থা নেই। তারপরও আমরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করে আমাদের বক্তব্য অবশ্যই আমরা তুলে ধরব জাতির স্বার্থে, দেশের জনগণের স্বার্থে। নির্বাচন কমিশনকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য নয়।
তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনের কমিশনের যে ক্ষমতা আছে, ভারতের নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা প্রায় একই রকম। ভারতের নির্বাচন কমিশন যদি নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে। বিগত নির্বাচনের সময় ভারতের মানমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনি হেরে গেছেন, মোদি জয়লাভ করেছেন। তার দল বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করেছে। সে ধরনের ঐতিহ্য, সে ধরনের চর্চা আমাদের বাংলাদেশে তো নাই। আমাদের নির্বাচন কমিশনের মধ্যে সে ধরণের সাহসী মানুষ, নিরপেক্ষ মানুষ নাই। সুতরাং তারা যতদিন পর্যন্ত দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে- এ রোড ম্যাপ বলুন, যতই তারা প্রচেষ্টা করুক না কেনো- সবই শেষ মুহূর্তে অর্থহীন হবে। কারণ তারা তখন শেষ মুহূর্তে সরকারের তল্পিবাহক বা আজ্ঞাবহ একটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হবে। তাদের অন্য কোনো উপায় থাকবে না।
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, এ নির্বাচন কমিশন সত্যিকারার্থে নিরপেক্ষ কমিশন না। আজকে প্রধানমন্ত্রীসহ এ সরকারের মন্ত্রী-নেতৃবৃন্দরা জনসভা করে নৌকায় ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে ভোট চেয়ে জনগণকে আহবান জানাচ্ছেন। আর আমাদেরকে রাস্তায় নামতে দেয়া হয় না। আমাদেরকে একটা সভা করতে দেয়া হয় না। আমাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাঙ্গামাটিতে একটা নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলেন সেখানে যারা ভুমিধসে নিহতের পরিবার ও আহতদের সমবেদনা জানানো জন্য, সেখানে তাকে যেতে দেয়নি। কতটুকু সরকার নিচু হয়ে যেতে পারে তা বলার নেই।
সংগঠনের সভাপতি হারুন-অর রশিদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এ বি এম ফারুকের পরিচালনায় সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, মহানগর নেতা আবদুল হান্নান, সেনাবাগ বিএনপির মোক্তার হোসেন পাটোয়ারি, শাহাদাত হোসেন আনসারী তিতুমীর, সেনবাগ জাতীয়তাবাদী ফোরামের ইউনুস পাটোয়ারি বাচ্চু, মোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
নির্বাচন কমিশনারকে তল্পিবাহক বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপি নেতা মওদুদ।
Date:
Share post: