অন্যায়ের সাজা হিসাবে তাকে দষর্ণ করতে চাওয়াটাই বড়ো অন্যায়

Date:

Share post:

করোনাভাইরাসের নমুনা ে সীমাহীন দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান সাবরীনা রিফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে তার স্বামী এবং জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা ডা.আরিফকে গ্রেফতার করেছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। 
জেকেজির দুর্নীতির বিষয়গুলো সামনে আসার পর থেকেই অবশ্য সাবরিনা দাবী করছিলেন,তিনি টির সঙ্গে জড়িত নন,স্বামী আরিফ তাকে মারধর করে,দুজনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে।
ডা.সাবরীনা অপরাধ করেছেন,তার কারণে হাজার হাজার মাষ ভুক্তভোগী হয়েছেন,অন্যায় করেছেন তাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে গ্রেফতার করছে ও প্রচলিত আইন অনুসারে তার বিচার হবে,দোষী প্রমাণ হলে সাজা হবে। কিন্ত মাধ্যমে কিছু পাণ্ডব যেভাবে তাকে বডি শেমিং করা শুরু করেছেন,তার ছবি নিয়ে নোংরামিতে মেতেছেন সেটাও কম গুরুতর অপরাধ নয়। এসব নোংরামি দেখে মনে প্রশ্ন জাগতে বাধ্য,সাবরীনা নারী বলেই কি এমন প্রতিক্রিয়া? 
টা অপরাধকে ঘৃণা করার জন্য আরেকটা অপরাধ সংঘটনের কোন মানেই হয় না।সাবরিনার বেলায় সেটাই ঘটছে। ফেসবুকে এসব নোংরামি করে যে বরং অপরাধী সাবরীনাকেই ভিক্টিম বানিয়ে দিচ্ছেন,সেটা বোঝার মতো মেধা স্রষ্টা হয়তো আপনাদের মস্তিস্কে দেয়নি।
অপরাধীর বিচার করার জন্য আইন আদালত আছে। সাবরিনা যদি অপরাধী হয় আমরা বিচার নিশ্চিতের জন্য দাবী তুলতে পারি,নিজের শক্তিশালী লবিং হার করে সাবরীনার মতো অপরাধী যাতে জামিন না পায়,আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে না পারে,বিচারকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে না পারে, সেদিকে নজর রাখতে পারি।কিন্ত সেসব বাদ দিয়ে সাবরীনার ‘আবেদনময়ী’ ছবি আপলোড দিয়ে ফেসবুক ভাসিয়ে ফেলাটা আমাদের কাজ না।
অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই দেখতে শিখুন দয়া করে, লোভনীয় কোন বস্তু বা খাবার হিসেবে নয়। সাবরীনা অপরাধী হলে অন্যায়ের সাজা তাকে পেতে দিন।আপনাকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি তার শাস্তির মাত্রা ঠিক করার।তার অন্যায়ের সাজা হিসেবে আপনি যদি তাকে ধর্ষণ করতে চান,সেটা আরও বড় অন্যায়।
রিজেন্ট পাতালের মালিক মোঃ সাহেদ এখনও গ্রেফতার হয়নি। ভুয়া রীক্ষা এবং লাইসেন্স না থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই রিজেন্ট হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, সাহেদকেও খুঁজছে পুলিশ। গত কয়েকদিন ধরে মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে সাহেদের ছবিতে ফেসবুক সয়লাব। অথচ কাউকে দেখিনি সাহেদকে নিয়ে বা তার সাথে ছবি প্রকাশ হওয়া কাউকে নিয়ে শারীরিক অবয়ব নিয়ে কথা বলতে। তাহলে সাবরীনার বেলায় ভিন্ন নিয়ম কেন? সাবরীনা নারী, একারণেই তো? 
করোনা পরীক্ষায় অনিয়ম জেকেজির দুর্নীতি এবং সরকারী চাকরিতে যুক্ত থাকা অবস্থাতেই আইন বহির্ভূতভাবে জেকেজির চেয়ারম্যান পদে থাকা এবং সব রকমের অনিয়মে যুক্ত থাকার অপরাধে সাবরীনার বিচার হোক, তাকে শাস্তির মুখোমুখি করা হোক। পাশাপাশি অনলাইনে তাকে নিয়ে যেসব নোংরামি হচ্ছে, এগুলোও বন্ধ হোক। নারীর প্রতি আমাদের সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির নমুনাই এতে শুধু প্রকাশ পায়, আর কিছুই নয়। যেটা অন্যায় সেটা সবসময়ই অন্যায়, ভালো মানুষের সাথে হলেও অন্যায়, খারাপ মানুষের সাথে হলেও অন্যায়। অপরাধী সাবরীনাকে ঘৃণা করতে গিয়ে দয়া করে নোংরামিতে জড়াবেন না, সেটা কোন ভদ্র ঘরের সন্তানের শোভা পায় না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক

ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আধা ঘণ্টার...

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কিশোরী তাসনীম ইসলাম প্রেমা (১৮) মারা গেছে

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কিশোরী তাসনীম ইসলাম প্রেমা (১৮) মারা গেছে। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম...

পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে

দেখতে দেখতে রমজান শেষ হয়ে এলো। স্বভাবতই রমজান শেষে মহিমাময় পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা এবং চাঁদ দেখে...

চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি থেকে গ্রেফতার

চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (১৫ মার্চ)...