অনলাইনভিত্তিক যৌন ব্যবসার প্ল্যাটফর্ম প্রথম শুরু করেন পাপিয়া

Date:

Share post:

অনলাইনভিত্তিক যৌন ব্যবসার প্ল্যাটফর্ম ‘এসকর্ট’ বাংলাদেশে প্রথম শুরু করেন যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউ। আর এই প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে রাজনীতিকে তিনি ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন তিনি।

এখান থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সুন্দরী তরুণী সরবরাহ করা হত। কয়েক বছর আগে ‘এসকর্ট’টি গড়ে তোলা হলেও এরই মধ্যে তা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে সারাদেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে।

যৌন ব্যবসার অনলাইনভিত্তিক সাইট ‘এসকর্ট’ এখনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় রয়েছে। রিমান্ডের প্রথম দিনেই জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দিয়েছেন সদ্য বহিষ্কৃত যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়া। এসকর্টের সঙ্গে জড়িত দেহব্যবসায়ী সুন্দরী তরুণী এবং তাদের খদ্দেরদের নামও বলেছে পাপিয়া।

র‌্যাবের এক কর্মকর্তা জানান, রাজনীতির নারীদের নিয়ে ‘বাণিজ্য’ করতেন পাপিয়া। রাজধানীর অভিজাত হোটেলগুলোয় মাঝেমধ্যেই ‘ককটেল পার্টি’র আয়োজন করতেন। এসব পার্টিতে উপস্থিত হতেন সমাজের উচ্চস্তরের লোকজন। মদের পাশাপাশি পার্টিতে উপস্থিত থাকত এসকর্ট গ্রুপের উঠতি বয়সী সুন্দরী তরুণীরা।

মদের নেশায় টালমাতাল আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে কৌশলে ধারণ করা হতো ওই তরুণীদের অশ্লীল ভিডিও। পরে ওইসব ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করতেন পাপিয়া। বনিবনা না হলেই ফেসবুকে ছড়িয়েও দেয়া হতো।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই পাপিয়ার কাছ থেকে বেরিয়ে আসছে একের পর এক মাথা ঘুরিয়ে দেয়া খবর। পাপিয়ার অপকর্মের সঙ্গীদের ধরতে এরই মধ্যে একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযান চলছে।

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, পাপিয়ার মূল ব্যবসা ছিল উঠতি শিল্পপতি-ব্যবসায়ীসহ সমাজের উঁচুস্তরের লোকদের ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায়।

আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা বলেছেন, নরসিংদী ও ঢাকার অনেক তরুণীকে চাকরির নামে তারকা হোটেলে ডেকে পার্টি গার্ল হিসেবে ব্যবহার করা হত। তাদের করা হত এসকর্টের সদস্য।

এসকর্টের সুন্দরীদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে বিত্তবানদের শয্যাসঙ্গী করতে বাধ্য করতেন পাপিয়া। এসব কুকর্মের বেশকিছু ভিডিও এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে।

জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার নাম বলেছেন, যাদের সঙ্গে তার ‘বিশেষ সম্পর্ক’ রয়েছে। মূলত এসব নেতাই পাপিয়ার উপরে ওঠার সিঁড়ি হিসেবে কাজ করেছেন। ক্ষমতাসীন দলের সাবেক একজন এমপির সঙ্গে তার ব্যবসায়িক সম্পর্ক নিয়েও মুখ খুলেছেন পাপিয়া।

এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পাপিয়ার অর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুদক পাপিয়া-মফিজুর রহমান সুমন দম্পতির স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের খোঁজ নিতে রাজস্ব বোর্ডকে খুব শিগগিরই চিঠি দেবে বলে জানা গেছে। এই দম্পতির ব্যাংক হিসাব জব্দের জন্যও বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেবে দুদক।

দুদক বলছে, পাপিয়া থেকে সুবিধা নেয়া রাজনৈতিক দলের নেতাদের তালিকা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। তালিকা পাওয়ার পর তাদেরও নজরদারির আওতায় আনা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...