সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার বেড়েছে লক্ষনীয়ভাবে।
বেসরকারি হিসেবে চলতি বছর জুন মাস পর্যন্ত প্রায় ৯৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন বজ্রপাতে।
গত বছর সাড়ে তিনশো মানুষ মারা গিয়েছিল এবং সে বছরই বহু মানুষের প্রাণহানির পর প্রথম বজ্রপাতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করে সরকার।
এরপর বজ্রপাত রোধে নেয়া হয় বিশেষ পরিকল্পনা এবং শুরু হয় সতর্কীকরণ কর্মসূচি।
কিন্তু তারপরও থেমে নেই এমন মৃত্যু।
আজ রোববার কুষ্টিয়ায় বৃষ্টিপাতের সময় বজ্রপাতের কবল থেকে রক্ষা পেতে ভ্যান থেকে নেমে মাঠের মাঝে একটি কাঁচা ঘরে কয়েকজন আশ্রয় নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি, সেখানেই বজ্রপাতে প্রাণ গেছে শিশুসহ ৫ জনের।
তাদের মধ্যে এগারো বছরের একটি শিশুও রয়েছে বলে জানান কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর থানার ওসি মো রফিকুল ইসলাম।
বজ্রপাত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছে ফাউন্ডেশন ফর ডিজাস্টার ফোরাম। এর সদস্য সচিব গওহর নাঈম ওয়াহারা।
তাদের হিসেবে বাংলাদেশের গত বছর বজ্রপাতে মারা যান ৩৫০জন। তার আগের বছর মারা যান ২৭৪ জন। ২০১২ সালের পর থেকে প্রাণহানির সংখ্যা দুইশোর নিচে ছিল না।
ডিজাস্টার ফোরাম বলছে এ বছর মে মাস পর্যন্ত ৬৭ জন প্রাণ হারিয়েছে। জুন মাসেও ত্রিশ জনের মতো প্রাণ হারায়। ফলেমোট সংখ্যা প্রায় একশো। এ সংখ্যা আরো বাড়ার আশংকা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন গওহর নাঈম ওয়াহারা।
বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যাটি একদিকে যেমন বাড়ছে তেমনি অন্যদিকে তার খবরও আগের তুলনায় প্রচার মাধ্যমে আসছে অনেক।
বজ্রপাতের ফলে প্রাণ হারাচ্ছেন মূলত কর্মক্ষম পুরুষেরা। গওহর নাইম ওয়াহারা বলছিলেন এর ফলে বহু পরিবার নি:স্ব হয়ে পড়ছে।
“বিভিন্ন সময় বজ্রপাতে হতাহতদের মধ্যে নারী ছিল, শিশু ছিল। কিন্তু কর্মক্ষম পুরুষের সংখ্যা প্রত্যেক মানুষের সংখ্যা কিন্তু সবচেয়ে বেশি। তারা কাজ করছিল। মাঠে কাজ করছিল, নৌকা চালাচ্ছিল, হয়তো কোনও একটা গাছের নিচে বসে বিশ্রাম ছিল।”
“বজ্রপাত কেড়ে নিচ্ছে গ্রামের কর্মঠ পুরুষদের তাদেরকে নিয়ে আমাদের কোন চিন্তা নেই। তারা এতই গরীব মানুষ” -বলছিলেন নাঈম ওয়াহারা।
- বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকাতে বাংলাদেশে দশ লাখ তালগাছ