রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সরকারের নীরবতা রহস্যজনক : মির্জা ফখরুল

Date:

Share post:

মিয়ানমারে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর বর্বর নির্যাতন ও গণহত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মচিব মির্জা ফখরুল সলাম আলমগীর।

একই সঙ্গে তিনি বাংলা সরকারের উদ্দেশে বলেন, অকারণে অনেক বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখালেও রোহিঙ্গাদের বিষয়ে নীরবতা রহস্যজনক।

আজ  এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, স্বৈরশাের কবলে দেশে দেশে জাতিগত সংঘাত, দুর্বল সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে উৎখাত, শোষণ-নিপীড়ণ অব্যাহত গতিতে চলছে। পার্শ্ববর্তী দেশে সংখ্যালঘু মুসলিম রাখাইনদের ওপর নিপীড়ণে বাংলাদেশ সরকারের দ্রুত তৎপরতা দেখানো উচিৎ ছিল। উচ্ছেদ হওয়া রোহিঙ্গাদের তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে তাদের বাঁচানো যেতো। পরবর্তীতে কুটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যেতো। কিন্তু অকারণে অনেক বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখালেও রোহিঙ্গাদের বিষয়ে নীরবতা রহস্যজনক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারকে আহবান জানাচ্ছি নির্যাতিত ও উচ্ছেদ হওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আমি আবারো মিয়ানমারে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রাখাইনদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তা বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে নজিরবিহীন মুসলিম নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। সেখানে চলছে নির্বিচারে গণহত্যা। মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর নৃশংসতায় দিশেহারা রাখাইন প্রদেশে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমরা। তাদের ওপর সে দেশের সেনাবাহিনী, পুলিশ ও সীমান্তরক্ষীদের নির্যাতন-নির্মমতা ইতোপূর্বের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। মুসলিম রোহিঙ্গা সম্পদায়ের বাড়িতে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। ধর্ষণ করা হচ্ছে শিশুসহ মা বোনদের। সব মিলিয়ে সেখানে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়-দের কোনো মানবাধিকার থাকতে পারে না। গত কয়েক দিনে সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে মুসলিম নিধনের প্রতিবাদে সারাবিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।

তিনি বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ণ সহ্য করতে না রে দেশের হাজার হাজার মুসলিম জনগোষ্ঠী বাঁচার জন্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপদ য় আশ্রয়ের জন্য ছুটছেন। নির্যাতনের ভয়াবহতা এতই ব্যাপক যে, রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠী ঝোঁপে, ঝাড়ে, জঙ্গলে, সমুদ্রে আশ্রয়ের জন্য ছুটে বেড়াতে গিয়ে অকাতরে প্রাণ হারাচ্ছে। এ এক ভয়াবহ মানব বিপর্যয়ের চিত্র।অসহায় দ্রুত আরাকান ও রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা এলাকায় কোনো মিডিয়া কর্মীকেও ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। বর্বর-অমানবিকতার সব রেকর্ড ছাড়ানোর কথা ইতোমেধ্য বিশ্বজুড়ে আলোচিত। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করা হয়েছে, অনুরোধ জানানো হয়েছে জাতিসংঘসহ বিশ্বের শক্তিশালী সরকারগুলোর পক্ষ থেকেও। কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনী সকল আবেদন, নিবেদন ও অনুরোধকে উপেক্ষা করে চলেছে। উপরন্তু রোহিঙ্গা নিধন অভিযানের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের ন্যায্য অধিকার প্রদান, অভিবাসী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন এবং বর্বর হামলা, খুন, নারী-শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন করে বাংলাদেশে তাদের আসতে বাধ্য করা বন্ধ করতে আহবান জানাচ্ছি। বিশ্ব সম্পদায়কে এ বর্বর নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানাচ্ছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

‘যারা ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে, তাদের বিচার নিশ্চিত করা হবে’

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র ও জনতার ওপর গুলি চালানোদের বিচার নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)...

বিচ্ছেদের ৮ বছর পর ‘ভুল বুঝতে পারলেন’ মিথিলা

জনপ্রিয় তারকা জুটি তাহসান খান ও রাফিয়াত রশিদ মিথিলার সম্পর্ক বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে শুরু হয়েছিল। ২০০৬ সালের ৩...

গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত হামাস

গাজায় যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে হামাস জানিয়েছে, তারা বিষয়টি নিয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী বিভিন্ন সশস্ত্র দল ও গোষ্ঠীর সঙ্গে...

জুলাইয়ে শহীদ হতে না পারাটা আমার জন্য আফসোস—ফেসবুকে আসিফ মাহমুদ

যুব, ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া শুক্রবার (৪ জুলাই) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক...